প্রতিনিধি: গ্রীণ লিফ সিএনজি ফিলিং স্টেশন নামে একটি গ্যাস পাম্পে গ্যাস রিফিলের সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের সাহাপুর এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেনের ছেলে আবুল কালাম ও রামগতি উপজেলার চরবাদাম এলাকার বাসিন্দা ও বাসচালক রুবেল হোসেন মারা যায়। আহতরা হলেন- আবুল হোসেন, নাইম উদ্দিন। দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।এর আগে গত দুই মাস আগেও একই ফিলিং স্টেশনে গ্যাস রিফিল করতে আসা আরেকটি বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিন জনের মৃত্যু হয়। একাধিকবার এমন দুর্ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ি করছে স্থানীয়রা।বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ভোর ৪ দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ইসলাম মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাসের সিলিন্ডারগুলো মেয়াদোত্তীর্ন হওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটে।স্থানীয়রা জানান, ভোর রাত ৪টার দিকে লক্ষ্মীপুর-রামগতি রুটে চলাচলকারী ‘আল মদিনা পরিবহন’ নামের একটি বাস গ্যাস নিতে গ্রীন লীফ গ্যাস স্টেশনে আসে। ফিলিং স্টেশন থেকে বাসের সিলেন্ডারে গ্যাস দেয়ার সময় হঠাৎ বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই রং মিস্ত্রী আবুল কালামের মৃত্যু হয়। এসময় আহত হন অন্তত ৪ জন। এসময় ঘটনাস্থলে মানুষ দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করে। পরে খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয়রা আরও জানায়, আল মদিনা নামের ওই বাসটি শহরের ঝুমুর এলাকায় রং এর কাজ শেষে ওই ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নিতে আসে। এসময় রংমিস্ত্রি আবুল কালামও ফিলিং স্টেশনে বাসের সাথে আসে। সেখানেই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে মারা যান আবুল কালাম। পরে সদর হাসপাতাল থেকে নোয়াখালী নেওয়ার পথে বাস চালক রুবেল মারা যায়।
স্থানীয়রা বলছেন, শীতের রাত হওয়ায় গাড়ির চাপ ফিলিং স্টেশনে ছিলোনা। তা না হলে হতাহতের ঘটনা আরও বাড়তো।
তাদের অভিযোগ, সিলিন্ডারের মেয়াদ যাচাই-বাছাই না করেই গ্যাস রিফিল করা হচ্ছে। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। একই ফিলিং স্টেশনে গত ১৪ অক্টোবর একটি বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিনজনের মৃত্যু ও ৯ জন আহত হয়।
গ্রীন লিফ সিএনজি ফিলিংস স্টেশনের ম্যানেজার আল আমিন দাবি করেন, যে বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে, সেগুলোর মেয়াদ রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন জানান, হাসপাতালে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তিন জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজন হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
সদর থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এর আগেও একই ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেটির মামলা চলমান রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা রনজিত কুমার বলেন, গ্যাস সিলিন্ডারের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এর মধ্যে একজন ঘটনাস্থলে মারা গেছে। তিনজন আহত হয়। বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :