প্রতিনিধি : রামগতি-কমলনগরের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল এখনো জলবদ্ধতায়। আমনের বীজতলা তৈরি ও আবাদের সময় প্রায় অতিক্রান্ত। তাই বানের পানিতে তলিয়ে থাকা লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার ভুলুয়া নদী তীরবর্তী ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ৪হাজার হেক্টর জমি অনাবাদী থেকে যাবে এবং উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে কাংখিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন আমন ধান কম উৎপাদান হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট উপজেলার কৃষি অফিস।
সুত্রটি আরও জানিয়েছে, ধান বপনের (বীজতলা তৈরি জৈষ্ঠ-আষাঢ এবং ধান বপন শ্রাবণ-ভাদ্র) সময় প্রায় শেষের দিকে হলেও এসব জমি এখনো ৩থেকে ৫ফুট পানিতে তলিয়ে আছে। এছাড়া বীজ এবং চারাগাছ সংকটের কারণে চাইলেও এখন আর আবাদ করা সম্ভব নয়। জনমগ্ন ইউনিয়ন সমূহ হলো রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা, চরআলগী চরবাদাম, চরগাজী এবং চরগাজী ইউনিয়ন।
ক্ষতিগ্রস্থ চাষী ও এলাকাবাসি জানিয়েছেন, প্রতি বছরই অতিবৃষ্টির কারণে কম-বেশি এমন সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। এ বছর বন্যার কারণে সমস্যা ব্যাপক আকার ধারন করেছে। কারণ হিসাবে তারা চিহ্নিত করেছে এ অঞ্চলের চাষাবাদের অন্যতম সারথি ভুলুয়া নদীর অবৈধ দখল, নদীর পানির স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ করে অসংখ্য মাছের ঘের তৈরি, নদীর দু’পাড় দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ জনবসতি এবং নদীর তলদেশ ভরাট হওয়াকে। সর্বপরি দখলদার প্রভাবশালীদের নিকট স্থানীয় প্রশাসনের আত্মসমর্পণকেও তারা দায়ী করেন। এ বিষয়ে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের কন্দ্রীয় সদস্য এডভোকেট মিলন মন্ডল বলেন, সমস্যা সমাধানে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে রেশনিং এর ব্যবস্থাসহ বিনাসুদে কৃষি ঋণ চালু করা একান্ত দরকার।
প্রতি বছর ২৩একর জমিতে আমনের চাষ করেন চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের কৃষক মোঃ শিপন। তিনি বলেন, এ বছর তিন বার আমনের বীজতলা তৈরি করেছি কিন্তু প্রথমে অতিবৃষ্টি এবং পরে বানের পানিতে তলিয়ে গেছে বীজতলা। এখনতো জমিতে প্রায় ৪-৫ ফুট পানির জলাবদ্ধতা তাই এ বছর অনাবাদী থেকে যাবে জমি। তাছাড়া পানি কমে গেলেও চারাগাছের অভাবে আবাদ করা সম্ভব হবেনা। কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো আমরা সারাবছর খাব-কি! আমাদের সারাবছরের অধিকাংশ খরচের যোগান আসে আমন ফসল থেকে। উল্লেখ্য ভুলুয়া নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা নোয়াখালী এবং লক্ষ্মীপুরের কৃষিবান্ধব একটি নদী। যা বর্তমানে বিভিন্নভাবে দখলদারদেও দখলে।
রামগতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, এ অঞ্চলের কৃষি কাজের জন্য ভুলুয়া নদী আর্শিবাদ হলেও বিভিন্ন কারণে নদীর পানি প্রায় স্থবির, সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। ফলে আমন আবাদের জন্য রামগতির ২৪হাজার হেক্টর নির্ধারিত থাকলেও জলাবদ্ধতার কারনে রামগতির ৪ হাজার হেক্টর অনাবাদী থেকে যাবে। তবে ৫-৭ দিনের মধ্যে পানি কমলে এবং চাষীদেরকে চারাগাছ সরবরাহ করতে পারলে আরও কিছু জমি চাষাবাদের আয়োতায় নিয়ে আসা যাবে। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সংকটের বিষয়ে অবহিত করেছি।
আপনার মতামত লিখুন :