রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:লক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে গত পাঁচ মাস ধরে ভাড়ায় চালিত সিএনজি-অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থী-অভিভাবক, নিম্ন ও মধ্য আয়ের চাকরিজীবী এবং সাধারণ যাত্রীসহ প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও ওই সড়কে অন্যকোন গণপরিবহন না থাকায় পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে।বুধবার (২৩ জানুয়ারী) রায়পুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আইনশৃংখলা ও সমন্বয় সভায় এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের উপস্থিতিতে সভার সদস্য সাংবাদিক এমআর সুমন বিষয়টি উত্তাপন করলে উদ্যেগ সৃষ্টি হয়।অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ প্রশাসন ও সিএনজি অটোরিকশার মালিক ও লাইনম্যানদের দ্বন্ধে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রায়পুর-ফরিদগঞ্জ ও চাঁদপুর সড়কে প্রতিদিন পাঁচ’শত সিএনজি -অটোরিকশা চলাচল করছিল। গত পাঁচ মাস ধরে সিএনজি-অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এই ব্যাস্ততম আঞ্চলিক সড়কে সিএনজি চালকরা জানান, রায়পুরের দায়িত্বে থাকায় ট্রাফিক ইন্সফেক্টর পারভেজ হোসেন বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে চাঁদপুর শহরের সিএনজিগুলো রায়পুরে প্রবেশ করছেনা। রায়পুরের যাত্রীদের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সীমানায় বোয়ার্ডার বাজারে নামিয়ে দেয়। পুলিশ সুপারের নির্দেশে প্রায় ৫ মাস রায়পুর-চাঁদপুর রুটে সিএনজি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনই কেউ না কেউ আমাদের ফোন করছেন, এমনকি আমাদের কাছে এসেও জানতে চাইছে শিগগিরই কি আমরা এ সড়কে সিএনজি চলাচল আবার শুরু করব কিনা। কিন্তু পুলিশ সুপারের নির্দেশ উপেক্ষা করে যাত্রী পরিবহন করার সাধ্য কারও নেই। তবে তিনি চাইলে এ সিএনজি অটোরিকশা আবার চালু হতে পারেন।
রায়পুর-চাঁদপুর সড়কে সিএনজি অটোরিক্সা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঠিকমতো নেতা ও প্রশাসন পর্যায়ে চাঁদা না দেয়া, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক সিএনজি চলাচলে রাস্তায় যানজটসহ কয়েকটি কারণে তা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। যাত্রীদের অভিযোগ সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ হওয়ায় এ ব্যাস্ততম সড়কে এখন ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের চলাচল অনেক বেশি। ভাড়াও যাত্রীদের বেশি গুনতে হচ্ছে।
রায়পুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ঢালী বলেন, আগে সিএনজি অটোরিকশা থাকায় রায়পুরের যাত্রীদের চাঁদপুর হয়ে লঞ্চে করে ঢাকায় যাওয়া খুব সহজ ছিল। এখন রিকশাচালকরা তিনগুন ভাড়া নিচ্ছে। সিএনজি অটোরিকশার ৭০ টাকার ভাড়া তারা ১৫০ টাকা দাবি করছে। এ ছাড়া সময়ও বেশিই লাগছে, কারণ রিকশা পেতে ও দরদাম করতেও অনেক সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, শ্রমিক, ব্যবসায়ী-চাকরিজীবীসহ নানা পেশার প্রায় অর্ধলক্ষ লোক এ পথে প্রতিদিন যাতায়াত করেন। এর মধ্যে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের যাত্রীদের জন্য কম খরচে ও অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য জনপ্রিয় বাহন ছিল সিএনজি অটোরিকশা। কিন্তু চার মাস আগে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে তা বন্ধ হয়ে যায়। সময়ের প্রয়োজনে একই সঙ্গে চাপ পড়ায় রিকশা না পেয়ে হেঁটে রায়পুর- ফরিদগন্জ বোয়ার্ডার বাজারে গিয়ে ফারিদঞ্জ ও চাঁদপুর জেলায় পৌঁছাতে হচ্ছে অনেককেই।
রায়পুরের দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক ইন্সফেক্টর ইকবাল পারভেজ বলেন, এক জেলার সিএনজি অন্য জেলায় যাওয়ার কোন নিয়ম নেই। পুলিশ সুপারের (কর্তৃপক্ষ) নির্দেশে এসড়কে সিএনজি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :