লক্ষ্মীপুরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সংসদ সদস্য (এমপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শাহজাহান কামালের (৭৪) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড লাহারকান্দি এলাকার বাড়িতে তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জানাজায় ইমামতি করেন টুমচর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা হারুন আল মাদানী।
এদিকে এমপি শাহজাহান কামালের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের সিনিয়র নেতারা গভীর শোক জানিয়েছেন।
বেলা ১১ টার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শাহজাহান কামালের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ জানাযায় অংশ নেন। লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার আগে তোফায়েল আহমেদ মোবাইল ফোনে বক্তব্য দিয়ে মরহুম শাহজাহান কামালের আত্মার মাগফেরাত কামনায় সকলের কাছে দোয়া চান।
লক্ষ্মীপুরে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত শাহজাহান কামালের ছোট ভাই ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নোমান, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী, ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হোসেন বিপ্লব, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আহমেদ ফেরদৌস মানিক প্রমুখ।
শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ১৯ মিনিটে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহজাহান কামাল মারা যান। তিনি প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-১১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ ও ১৮ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে প্রায় এক বছর তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
শাহজাহান কামাল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার লাহারকান্দি এলাকার ফরিদ আহমেদ ও মাছুমা খাতুন দম্পতির বড় ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, শাহজাহান কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ও ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী ও জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতিও ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :