সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৪ জুলাই)। ২০১৯ সালের এই দিনে তিনি ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় পার্টির (জাপা) পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আজ সকাল ৯টায় কাকরাইলস্থ জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অপর্ণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকেল ৩টায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) মিলনায়তনে স্মরণসভা অনুষ্ঠান।
স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি। সভায় জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
এ ছাড়া সারা দেশের ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা, মহানগর, জেলা ও বিভাগীয় কমিটি এ উপলক্ষে আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে ও আলোচনা সভার আয়োজন করবে।
আগামী ১৫ ও ১৬ জুলাই জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাধারণ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।
১৬ জুলাই দুপুর ১২টায় ঢাকা মহানগর উত্তর-এর আহ্বায়ক ও জাতীয় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টুর উদ্যোগে মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট সংলগ্ন কার্যালয়ে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও খাবার বিতরণ করা হবে।
এ ছাড়া আগামী ২০ জুলাই বেলা ১১টায় হাজারীবাগ শাহজাহান মার্কেট চত্বরে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
রংপুরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করে ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি লাভ করেন তিনি। ওই বছরের আগস্টে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে সেনাবাহিনীর প্রধান হন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ১৯৭৯ সালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন তিনি। দেশের একটি ঐতিহাসিক সংকটময় মুহূর্তে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। দীর্ঘ নয় বছর দেশ পরিচালনা শেষে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন।
দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। ১৯৯১ সালে গ্রেপ্তার হন তিনি। অন্তরীণ থাকা অবস্থায় ওই বছরই রংপুরে জাতীয় সংসদের পাঁচটি আসনে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। কারাগারে থেকেই ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়ে তিনি পাঁচটি আসনে জয়ী হন।
১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্ত হন এরশাদ। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন তিনি।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে জয়ী হয়। এরপর দশম ও চলতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালনের মধ্যেই অসুস্থ হন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সিএমএইচে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন এবং শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :