কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বেড়ে জেলার ৬০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১০ হাজার মানুষ। কয়েকদিন ধরে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ৩০টি পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে প্রায় ২০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, জেলার সবকটি নদ-নদীতে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাটেশ্বরী পয়েন্ট দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা সেতু পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার, নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫৩ সেন্টিমিটার, কাউনিয়া তিস্তা পয়েন্টের পানি ৮৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ওই গ্রামের মো. আলহাজ মিয়া বলেন, ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। নৌকায় প্লাস্টিক টাঙিয়ে ঘুমাই। বৃষ্টি এলে ভিজে যাই। বন্যায় আমাগোর খুবই কষ্ট। বড়রা কষ্ট করতে পারলেও ছোট বাচ্চাদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
ওই গ্রামের আছিয়া বেগম বলেন, গতমাসে নদী ভাঙনে এ চরে আসছি। নিচু জায়গা গত সাতদিন ধরে পানিবন্দি। পানিতে কাজ করতে গিয়ে হাতে ঘা ধরেছে। থাকার কষ্ট, খাওয়ার কষ্ট, কী পরিমাণ কষ্টে আছি বলে বোঝাতে পারব না।
মো. মনির হোসেন বলেন, পানিবন্দি হয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। নদীতে পানি বাড়ায় চারদিকে পানি আর পানি। কাম কাজ নাই। রোজগার না থাকলে সংসার চালাই ক্যামনে।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বাবলু মিয়া বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি। বিশেষ করে মশালের চর, ফকিরে হাট, বতুয়াতুলি, মুসার চরের মানুষজন খুবই কষ্টে আছেন। সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ দেয়া না হলেও হতদরিদ্র ও দুঃস্থদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ৬০ গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। জেলার ৩০ পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নগদ অর্থ ও শুকনা খাবার মজুত রয়েছে। যেখানে যখন প্রয়োজন পড়বে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :