গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমরসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি। পানি বৃদ্ধি পেলেও এখন পর্যন্ত সবগুলো পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি ঢুকে পড়ছে নদ-নদী অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলোতে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। এখনো ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ না করলেও তলিয়ে গেছে এসব এলাকার পটল, ঢেঁড়সসহ বিভিন্ন সবজিক্ষেত। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যা হতে পারে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের মানুষ। নিম্নাঞ্চলের সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুঃচিন্তায় পড়েছেন তারা।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজার এলাকার এরশাদুল হক বলেন, আমার দুই বিঘা জমিতে পটল ছিল। আজ সকালে পটলক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। যতদূর পেরেছি ক্ষেত থেকে পটল কিছু তুলেছি। আর বাকিগুলো তুলতে পারিনি।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের রহিম মিয়া বলেন, আমার গ্রামে প্রায় ৬০টির মতো পরিবার আছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধির ফলে অনেকের বাড়িতে পানি উঠছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অবস্থা খুব খারাপ আছে। খুব টেনশনে আছি আমরা।
সদরের ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালেক সরকার বলেন, পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমার ইউনিয়নের প্রথম আলোর চর ও রসুলপুর চরের অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে এখনো কারও ঘরে পানি প্রবেশ করেনি। আমরা পানিবন্দি পরিবারগুলোর খোঁজখবর রাখছি।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৩-৪ দিন থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে চরের অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অনেক বাড়িতে আগামীকালের মধ্যে ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ করবে এবং বন্যা সৃষ্টি হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ২২ ও ২৩ জুন এসব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী জানতে পেরেছি। তবে আগামী ১০দিনের মধ্যে বড় কোনো বন্যার শঙ্কা নেই।
আপনার মতামত লিখুন :