নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে গাছ ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে শারিরীক নির্যাতনের ঘটনার মামলা তুলে নিতে বাদী আব্দুল মাজেদ রাজীবকে হত্যার হুমকির দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও মামলার প্রধান আসামি আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়।
বুধবার (১৪ জুন) বিকেল ৩ টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা রাজীব এ অভিযোগ করেছেন। ইউপি সদস্যের হুমকিতে তিনি আতংকে রয়েছেন বলে জানিয়েছন। ঘটনাটি তিনি মোবাইলফোনে কল করে রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেনকেও জানিয়েছেন।
রাজীব চরবাদাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়নের পূর্ব চরসীতা গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে।
ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম নিজেকে চরবাদাম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দাবি করছে।
ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল মাজেদ রাজীব বলেন, ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম আমার বড় ভাই সুমনকে অপহরণ করে অমানবিক নির্যাতন করেছে। এ ঘটনায় আমি মামলা করেছি। ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তারা জামিনে এসে আমাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে আমাকে হত্যা করা হবে বলে জানিয়েছে। তার (আব্দুর রহিম) দাবি, ‘ফাঁসি হলে টাকার হবে, তার কিছুই হবে না’। একটি প্রভাবশালী মহল বিভিন্ন অপকর্মে তাকে মদদ দিচ্ছে।
ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, রাজীবদের সঙ্গে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এজন্য সাজানো ঘটনায় মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। রাজীবকে হুমকি দেওয়া ঘটনা সত্য নয়। বুধবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, মামলার বাদী আমাকে মোবাইলফোনে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নিয়েছেন। অন্তবর্তীকালীন জামিন শেষে তাদেরকে নিম্ন আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী মো. সুমন জানায়, বুধবার (৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীত নেতা রাজিবদের এলাকা পঞ্চায়েত বাড়ির জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে কয়েকজন লোক আসেন। একপর্যায়ে মামলা আছে বলে তারা পুলিশ পরিচয়ে রাজীবের ভাই সুমনকে (৩৫) তুলে নিয়ে যায়। পঞ্চায়েত বাড়ির জামে মসজিদ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ভুলুয়া নদীর পাশে ফিরোজ মিয়ার প্রকল্প এলাকার নির্জন স্থানে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় গাছের সঙ্গে দুই হাত বেঁধে তার (সুমন) মোবাইল ফোন থেকেই ইউপি মেম্বার আবদুর রহিমকে কল দেওয়া হয়। ফোন পেয়ে মেম্বার আবদুর রহিম ঘটনাস্থলে যান। এর পরই সুমনকে বিবস্ত্র করার নির্দেশ দেন তিনি। একপর্যায়ে তার শরীরে পিঁপড়া ছেড়ে এলোপাতাড়ি লাথি-ঘুসি মারতে থাকেন। পরে মুখে কাদা ঢুকিয়ে দিলে বমি করেন সুমন। এসময় ফের মুখে লতাপাতা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরে মুখমণ্ডল কালো কাপড়ে বেঁধে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান তারা। রাত ১টার দিকে পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে সুমনের ভাই রাজিব বাদী হয়ে থানায় অপহরণ মামলা করেছেন। মামলায় ইউপি মেম্বার আবদুর রহিমসহ সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :