বরিশাল সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘আমি তাদের বাবার বয়সী। আমার চুল দাড়ি সবই পেকেছে। অথচ তারা আমাকে রক্তাক্ত করেছে। রক্ত যখন ঝরিয়েছি তাই শেষ রক্ত বিন্দু পর্যন্ত মাঠে থাকব। এই সরকারকে পতন না করে ঘরে ফিরব না।
সোমবার (১২ জুন) ২২নং ওয়ার্ডে ৮৭ নম্বর কেন্দ্রে সাবেরা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনকালে মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেছেন মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীমে। নৌকার ব্যাজধারী লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তার। আজই মামলা করবেন তিনি।
ফয়জুল করীম জানান, নগরীর ২২ নং ওয়ার্ডে ৮৭ নম্বর কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দেখি নৌকার সমর্থকরা ভোটকক্ষে ঢুকে ভোটারদের বলছেন, নৌকায় ভোট দিলে দাও, না হলে চলে যাও। এসময় আমি প্রিসাইডিং অফিসারকে এসব বিষয় বলছিলাম। তখন নৌকার কর্মীরা এসে আমাকে ও আমার সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের ওপর হামলা চালিয়ে জখম করে। বিষয়টি সম্পর্কে রিটার্নিং অফিসার ও পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।
পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বিপিএম (বার) বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এই হামলা। যেই করুক না কেন তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। একটি ঘটনা আমাদের এক মাসের পরিশ্রম হালকা করে দিলো।
এর আগে সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টা ১১ মিনিটে নগরীর রুপাতলী হাউজিং সোসাইটির আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন মুফতি মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। এ সময় তিনি বলেন, ‘শুরুটা ভালো। তবে শঙ্কা আছে। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ হয় তাহলে ফলাফল যাই হোক তা মেনে নেব।’
হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আরও বলেন, ‘শুরুটা ভালো, আলহামদুলিল্লাহ। শুধু কাউনিয়ার একটি কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টকে নামিয়ে দেয়া হয়েছিল। সেখানকার নির্বাচন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে পরে সেই সমস্যার সমাধান হয়। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। ভোটারদের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। আটটা বাজার আগেই তারা ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে এসে হাজির হয়েছেন।’
প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, ‘আমি প্রশাসনকে বলবো, ভোটাররা যে বুক ভরা আশা নিয়ে ভোট কেন্দ্রে এসেছেন, তাদেরকে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দেবেন এবং কোনো অবস্থাতেই যেন ভোটের রেজাল্ট কারচুপি না করা হয়।’
বরিশাল সিটি করপোরেশনে (বিসিসি) সাতজন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ১১৮ জন সাধারণ ও ৪২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ভোটে লড়ছেন। এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন পুরুষ ও ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন নারী।
বিসিসির মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, জাতীয় পার্টির প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, জাকের পার্টির মিজানুর রহমান, স্বতন্ত্র হিসেবে সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপন প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :