নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমাম হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা দুই আসামিকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৬ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মামলার পাঁচ আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুই নম্বর আসামি মশিউর রহমান নিশান পাঁচ দিনের ও ১৪ নম্বর আসামি আজিজুল ইসলাম বাবলুকে তিন দিনের রিমান্ড দেন আদালত। বাবলুকে নিয়ে শুক্রবার রাতে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে যাওয়া হয়। তার দেওয়া তথ্যে হত্যার ঘটনাস্থলের অদূরে মাঠের পাশে কলাবাগান থেকে কলাপাতা মোড়ানো একটি দুনলা দেশীয় বন্দুক ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।’
এ ঘটনায় দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেছেন।
আদালতে জবানবন্দিতে মামলার তিন নম্বর আসামি দেওয়ান ফয়সাল ও ১৮ নম্বর আসামি আলমগীর ওরফে কদু আলমগীর হত্যায় ব্যবহার করা অস্ত্রের তথ্য দেন। তার ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয় বলে জানান ওসি।
অস্ত্রগুলো যিনি দিয়েছেন তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
ওসি বলেন, ‘আটটি দলে ৩৫-৪০ জন সন্ত্রাসী এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। যিনি তাদের অস্ত্র দিয়েছেন জবানবন্দিতে দেওয়ান ফয়সাল ও আলমগীর তার নাম বলেছে। এ ছাড়া অনেকের কাছেই দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র ছিল।’
পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা অস্ত্র উদ্ধারে নেমেছি। সবগুলো অস্ত্র আমরা উদ্ধার করব। তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছু গোপন রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আশরাফ বলেন, ‘অস্ত্র মামলার আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। তদন্তের স্বার্থে আরও তথ্যের প্রয়োজন আছে। প্রধান আসামিকে ধরার জন্য আমরা বিভিন্ন অভিযান শুরু করেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী, ডিআইওয়ান একেএম আজিজুর রহমান মিয়া, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন, চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলামসহ প্রমুখ।
গত ২৫ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজার এলাকায় জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থল গিয়ে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা নোমানকে মৃত ঘোষণা করেন। ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান। ২৬ এপ্রিল রাতে নিহত নোমানের বড় ভাই ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
এতে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম জিহাদীকে প্রধান করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর থেকে র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১১ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :