• ঢাকা
  • সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২৪ মার্চ, ২০২৩
আপডেট : ২৪ মার্চ, ২০২৩



তারাবির নামাজ বিষয়ক মাসয়ালা

গ্রামীণ কণ্ঠ

পবিত্র রমজান মাসে এশার নামাজের পর যে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে তারাবির নামাজ বলে।

পুরুষদের জন্য তারাবির নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নত। তারাবির নামাজে কোরআন শরিফ খতম করা সুন্নত আমল। নারীদের জন্যও ২০ রাকাত তারাবি সুন্নত। তারাবির নামাজের সময় হলো- এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত।

কোরআন তেলাওয়াতে যেমন সওয়াব, কোরআন পাঠ শ্রবণেও একই রকম সওয়াব। রমজানের খতমে তারাবি এই সওয়াব লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ। সওয়াব লাভের এই উপলক্ষ যেন নির্ভুল হয়, তাই আজ থাকছে খতমে তারাবি সংক্রান্ত কিছু মাসয়ালা।
খতমে তারাবিতে উঁচু আওয়াজে বিসমিল্লাহ বলা
দেশের অনেক মসজিদে এখন খতমে তারাবি অনুষ্ঠিত হয়। খতমে তারাবির সময় হাফেজ সাহেবরা যে কোনো একটি সূরার শুরুতে উচ্চ আওয়াজে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম তেলাওয়াত করেন। এর কারণ হলো- বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কোরআনে কারিমের স্বতন্ত্র একটি আয়াত, যা দুই সূরার মাঝে পার্থক্য করার জন্য আল্লাহতায়ালা অবতীর্ণ করেছেন। আর তারাবরি নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের পুরো কোরআনের খতম শোনাতে চাইলে যে কোনো একটি সূরার শুরুতে উঁচু আওয়াজে বিসমিল্লাহ পড়তে হবে। অন্যথায় বিসমিল্লাহ না বলার কারণে মুসল্লিদের খতম অপূর্ণ থেকে যায়। আর ইমামের জন্য সব নামাজেই সূরা ফাতেহা এবং সব সূরার শুরুতে অনুচ্চস্বরে বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব। -ইমদাদুল ফাতাওয়া: ১/৩২৮

খতমে তারাবিতে সূরা ইখলাস একবারই পড়া
সমাজের প্রচলিত আছে যে, তারাবির সময় কোরআনে কারিম খতম করার ক্ষেত্রে সূরা ইখলাস তিনবার পড়ার। কিন্তু ইসলামি শরীয়তে এমন কোনো বিধান নেই। সাহাবা-তাবেয়িন থেকেও এমন কোনো আমলের প্রমাণ নেই। ইসলামি স্কলাররা এই আমলকে অপছন্দ করেছেন। সুতরাং তারাবিতে কোরআন খতমের সময় সূরা ইখলাস তিনবার পড়ার প্রচলনটি ঠিক নয়। তাই এমন কাজ থেকে বিরত থাকবে এবং অন্য সূরার মতো যথানিয়মে সূরা ইখলাস একবারই তেলাওয়াত করবে।

তারাবির নামাজ ছুটে গেলে করণীয়
ব্যস্ততার দরুণ অনেকেই নির্ধারিত সময়ে তারাবির নামাজের জন্য মসজিদে যেতে পারেন না। আবার অনেককে দেখা যায়, তারাবির নামাজ কয়েক রাকাত পড়ার পর মসজিদে যাচ্ছেন। এমন মুক্তাদির জন্য এশা ও তারাবির নামাজ আদায়ের নিয়ম হলো- প্রথমে এশার ফরজ ও সুন্নত আদায় করা। পরে ইমামের সঙ্গে তারাবির নামাজে অংশ নেওয়া। তারাবির জামাত শেষে ইমামের সঙ্গে বেতর নামাজও জামাতে পড়ে নেওয়া। এরপর শুরুতে ছুটে যাওয়া তারাবির বাকি নামাজ আদায় করা।

যেহেতু রমজান মাস অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতের মাস, এ মাসে ইবাদত-বন্দেগির সওয়াব অনেক বেশি। তাই রমজানে নামাজ ও জামাতের প্রতি যত্নবান হওয়া এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই মসজিদে চলে যাওয়া উচিত।

তারাবির নামাজে শুধু তাশাহহুদ নয়, দরূদ এবং দোয়াও পড়তে হবে
অনেক মসজিদে তারাবির সময় ইমাম সাহেব নামাজের শেষ বৈঠকে এ পরিমাণ বসার পর সালাম ফিরিয়ে নেন, যে সময়ে শুধু তাশাহহুদ পড়া যায়। দরূদ শরীফ ও দোয়া মাছুরা পড়া যায় না। নামাজে এমন তাড়াহুড়া করা ঠিক না।

অন্য নামাজের মতো তারাবির নামাজের শেষ বৈঠকে দরূদ ও দোয়ায়ে মাছুরা পড়া সুন্নত। ইমাম-মুক্তাদি সবার জন্যই সুন্নত। তাই ইমামের উচিত শেষ বৈঠকে দোয়া-দরূদ এমন ধীরগতিতে পড়া যেন ওই সময়ের মধ্যে মুক্তাদিদের দরূদ ও দোয়ায়ে মাছুরা পড়া সম্ভব হয়।

তারাবির নামাজে দরূদ ও দোয়া মাছুরা পড়তে হবে না- এমন কোনো নিয়ম নেই। ইমাম-মুক্তাদি সবার জন্য তা পড়া সুন্নত। -আল বাহরুর রায়েক: ২/৬৯

তারাবির নামাজে ভুলে এক সালামে চার রাকাত পড়ে ফেললে করণীয়
একা একা তারাবির নামাজের সময় ভুলে কেউ যদি একসঙ্গে চার রাকাত আদায় করে, অর্থাৎ দুই রাকাতের পর তাশাহহুদ পড়ে দাঁড়িয়ে আরও দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে; তাহলে তার নামাজ হয়ে যাবে। এখানে চার রাকাত নামাজ পড়া হয়েছে বলে ধরা হবে।

তবে তারাবির নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে একসঙ্গে চার রাকাত পড়া ঠিক না। -আল বাহরুর রায়েক: ২/৬৭

 

আরও পড়ুন