নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরে পর্নোগ্রাফি মামলায় জহিরুল ইসলাম খোকন (৪৮) নামের এক আসামির তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন জানান, রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তিনি জামিনে ছিলেন। রায়ের পর তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত খোকন সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের ঘোরারবাগ এলাকার আবদুস শহীদের ছেলে। তিনি প্রবাসফেরত বলে জানা গেছে।
মামলার এজাহার সূত্র জানায়, সম্পর্কে আসামি খোকন বাদীর ফুফাতো বোন। এতে বাদীর বাড়িতে আসামির আসা-যাওয়া ছিল। সে সুযোগে ২০১৭ সালের প্রথমদিকে বাদীকে ঘরে একা পেয়ে জুসের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে অশ্লীল ছবি ধারণ করে আসামি। ওই ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বাদীর আরও অশ্লীল ভিডিও-ছবি নেয়। ২০১৯ সালের ১৭ আগস্ট একইভাবে বাদী মায়ের মোবাইল নম্বরে বিভিন্ন ধরণের কু-প্রস্তাবমূলক খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠায়। এর ছয়মাস আগে ফরহাদ হোসেন নামের এক প্রবাসীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এর চারমাস পরই তার স্বামী বিদেশ চলে যায়। এতে খোকন পুরনো অশ্লীল ছবি-ভিডিও তার স্বামীকে দেবে বলে হুমকি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের জন্য কু-প্রস্তাব দেয়৷
এদিকে কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর ছবি-ভিডিওগুলো খোকন তার স্বামীর ইমো নম্বরে পাঠিয়ে দেয়। তখন বাদী তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এরপরও আসামির কু-প্রস্তাব অব্যাহত থাকে। একপর্যায়ে ছবি-ভিডিওগুলো আত্মীয়-স্বজনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ায় হয়। পরে ২৭ নভেম্বর ওই নারী বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় খোকনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল চন্দ্রগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এতে বলা হয় ঢাকার মালিবাগে পুলিশের সিআইডি বিভাগের সাইবার ফরেনসিকের মাধ্যমে তিনটি মোবাইল সেট পরীক্ষা করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামির তিন বছরের কারাদণ্ড দেন।
আপনার মতামত লিখুন :