• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩



লক্ষ্মীপুরে লাশ আটকে স্ট্যাম্পে সই, চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের নামে মামলা

গ্রামীণ কণ্ঠ

নিজস্ব প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরে কাতার প্রবাসীর লাশ আটকে রেখে অলিখিত স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন কাজলসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ওই প্রবাসীর স্ত্রী নাজমা আক্তার নাছু বাদী হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

বাদীর আইনজীবী আনোয়ার হোসেন মৃধা সোনালীনিউজকে বলেন, আদালতের বিচারক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়েছেন। আগামি ২০ ফেব্রুয়ারি স্ট্যাম্পগুলো উদ্ধার করে আদালতে দাখিল করার জন্য সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নাছু লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকার মৃত মো. বেল্লাল হোসেনের স্ত্রী। তার স্বামী বেল্লাল ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কাতারে মারা যান। ৫ ডিসেম্বর তার মরদেহ দেশে আনা হয়।

অভিযুক্ত কাজল সদর (পূর্ব) থানা বিএনপির সদস্য ও সদর উপজেলা বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের আদিলপুর গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন আলতাফ হোসেন, মহিব উল্যা ও কাজী আরিফ হোসেন।

এজাহার সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের সঙ্গে বাদীর স্বামী বেল্লালের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। পরে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিয়ে তাদের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। এরপর বেল্লাল কাতারে চাকরির উদ্দেশ্যে চলে যান। সেখানে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গত বছর তার মরদেহ দেশে আনলে টাকা পাওনার কথা বলে দাফনে বাঁধা দেয় অভিযুক্তরা। কোনভাবেই তারা মরদেহ দাফন করতে দিচ্ছিল না। একপর্যায়ে তারা বাদীর কাছ থেকে বাধ্য করে ৩০০ টাকার অলিখিত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সই নেয়। পরে এনিয়ে তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। সেখানে হিসেব করে দেখা যায়, তারা কোন টাকা পাবে না। উল্টো তাদের কাছে বেল্লাল ৪১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। তখন এতে এক সপ্তাহের মধ্যে টাকাসহ সই নেওয়া অলিখিত স্ট্যাম্পগুলো ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু একমাস পার হয়ে গেলেও তার স্ট্যাম্প ও টাকা দেইনি। উল্টো তারা স্ট্যাম্পগুলো দিয়ে বাদীকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার পাঁয়তারা করছেন।

নাজমা আক্তার নাছু বলেন, আমার স্বামীর মরদেহ দাফনের জন্য সকল প্রস্তুতি নিলে অভিযুক্তরা ৩-৪ ঘন্টা আটকে রাখে। পরে বাধ্য হয়ে আমি অলিখিত স্ট্যাম্পে সই করি। পরে বৈঠকে বসে হিসেব করে দেখি, বেল্লাল অভিযুক্তদের কাছ থেকে ৪১ লাখ টাকা পাবে। ওই টাকাসহ স্ট্যাম্প ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তারা দিচ্ছে না। উল্টো স্ট্যাম্প দিয়ে তারা আমাকে ফাঁসানোর জন্য পাঁয়তারা করছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন কাজল বলেন, বেল্লাল আমার ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। তিনি স্থানীয়দের কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে টাকা ধার নেয়। ওই টাকা পরিশোধ না করেই তিনি বিদেশ গিয়ে মারা যান। পরে পাওনাদাররা তার মরদেহ আটকে রাখে। পরে লিখিত স্ট্যাম্পে তার স্ত্রীর স্বাক্ষর নিয়েছিলাম। এনিয়ে প্রথমে সদর মডেল থানায় পরে এসপি অফিসে বৈঠক হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, আদালতের আদেশের কপি আমাদের কাছে পৌঁছায়নি। আদেশের কপি হাতে পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে।

আরও পড়ুন