প্রতিনিধি:দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে পশ্চিমের জেলা লক্ষ্মীপুরে, বইছে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ। যদিও বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকালেই উঠেছে সূর্য, প্রখরতাও ছিল বেশ। ফলে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ করার ঘোষণা এখনো দেননি শিক্ষা কর্মকর্তা।লক্ষ্মীপুরে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তাপমাত্রা কমলেও সারাদিনই দেখা নেই সূর্যের। ফলে স্বস্তি নেই জনজীবনে। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশায় প্রভাব রয়েছে । তবে ভোরে থেকে এ রিপোট লেখা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা বিরাজ করছিলো। সকাল থেকে সূর্যের দেখা নেই ও কুয়াশার প্রভাব ফেলছে।
পশ্চিমের এই জেলায় অবস্থানগত কারণে একটু শীত বেশিই প্রভাব বিস্তার করে এবং দীর্ঘস্থায়ীও হয়। একটি মৌসুমে বেশ কয়েকটি শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করে। এই মৌসুমে এ নিয়ে তিনটি শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়লো এই জেলা। আগামী সপ্তাহে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর।
শীত মূলত এই এলাকার মানুষের জন্য কষ্টের একটি মৌসুম। কারণ এই মৌসুমে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের আয় রোজগারে ভাটা পড়ে, কৃষকের ফসল নষ্ট হয়। কৃষি অঞ্চলের এলাকাটিতে বর্তমানে সয়াবিন, আলু ও টমেটোসহ বিভিন্ন ফসল রয়েছে মেঘনা নদী বেষ্টিত বিশাল চরাঞ্চলের মাঠে। আর এই কুয়াশার কারণে এই ফসল ইতিমধ্যেই সমস্যায় পড়েছে। ফসল রক্ষার্থে কৃষকরা সয়াবিন সহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
তাছাড়া আর কয়েকদিন পরই শুরু হবে সয়াবিন ও বোরো চারা রোপণের কার্যক্রম। কিন্তু বীজতলায় চারার অঙ্কুরোদগম হচ্ছে কম। কৃষকরা বলছেন, এর মূল কারণই হলো শীত।
চরকাছিয়া এলাকার মাহমুদ আলী বলেন, সয়াবিন ও বোরো বীজতলার চারা কম, আবার যেসব চারা রয়েছে সেগুলোও বাড়ছে না, লালচে হয়ে যাচ্ছে। শীত কমলে চারা বাড়বে।
হায়দরগন্জবাজার এলাকার বেরিবাঁধ সড়কের পাশের বাসিন্দা সুরিজ মিয়া বলেন, আমাদের যে সয়াবিন ক্ষেত রয়েছে সেগুলোর পাতা পচে কিংবা মরে যাওয়ার মতো হয়ে গেছে। ঘন কুয়াশা আর শীতের কারণে এটি প্রতি বছরই হয়। এজন্য স্প্রে করছি, তেমন কাজ হচ্ছে না।
লক্ষ্মীপুরের আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, মূলত ঘন কুয়াশার প্রভাব থাকা এবং হিমেল বাতাস থাকায় মানুষের মধ্যে একটু স্বস্তিও নেই। এই তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন বিরাজ করতে পারে।
রায়পুর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম জানান, সরকারি ঘোষনা আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদেরকে জানিয়ে দেওয়া হবে যে ক্লাস না করার জন্যে। যেসব শিক্ষার্থী সকালে বিদ্যালয়ে এসেছিল তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বিদ্যালয়েই থাকবে। রবিবারেও যদি তাপমাত্রা কম থাকে তাহলেও একই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :