খুলনায় এক টাকায় মিলছে ইফতার। মহানগরীর দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বাজারে ইকবাল মোল্লার হোটেলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় এক টাকায় ইফতার বিক্রির এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতি পিস বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ ও ঝালের চপ এক টাকা করে বিক্রি করছেন তারা। পুরো রমজান মাস চলবে তাদের এই কার্যক্রম।
ইকবাল মোল্লা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। তারা বলছেন, রমজানে কতিপয় ব্যবসায়ী অধিক মুনাফায় পণ্য বিক্রি করে। সেখানে ইকবালের দোকানে সাশ্রয়ী মূল্যে ইফতার মিলছে। এটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এতে মানুষ ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ হবে, যা সমাজ ও দেশের উপকারে আসবে।
আয়োজকরা জানান, নগরীর মহেশ্বরপাশা বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী ইকবাল মোল্লা গত ১৬ থেকে ১৭ বছর ধরে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করে আসছেন। প্রতিবছর তিনি এক পিস বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ ও ঝালের চপ এক টাকা করে বিক্রি করেন। তবে বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতির কারণে ইফতার সামগ্রী তৈরিতে ব্যয় বেড়েছে। ফলে এবারের রোজায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালে রাখতে ওই বাজারের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় ভর্তুকি দিয়ে এক টাকায় ইফতার সামগ্রী বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রতিদিন ৭ হাজার পিস ইফতার সামগ্রী তৈরি করা হয়। ভোর থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত চলে এই ইফতার সামগ্রী তৈরির কাজ। যা বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।
এক টাকায় ইফতার বিক্রির উদ্যোক্তা হোটেল ব্যবসায়ী মো. ইকবাল মোল্লা বলেন, কমমূল্যে ইফতার বিক্রির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা। যাতে খেটে খাওয়া মানুষগুলো স্বল্পমূল্যে ইফতার কিনে খেতে পারে। আমার এখানে ছোলা বাদে চপ, বেগুনি, কাচা ঝালের চপ, পেঁয়াজু এক টাকা পিস বিক্রি করা হয়। রমজান জুড়ে চলবে আমাদের এই আয়োজন। আগে আমি একাই এই আয়োজন করতাম। এখন বাজারে সব কিছুর দাম বেশি হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও আমাকে সহযোগিতা করছেন।
বাজারের ব্যবসায়ী মো. জনি ও গোবিন্দ কুমার দাস বলেন, পুরো রমজান মাস এই ইফতার বিক্রি করা হবে। সব শ্রেণীর মানুষ যাতে ইফতার সামগ্রী ক্রয় করতে পারে সেই জন্য আমাদের এই আয়োজন। স্থানীয় দোকানিরাও ইকবালকে ইফতার সামগ্রী বিক্রিতে সহযোগিতা করেন। স্থানীয় শিবুপদ দে, মনিরুল ইসলাম টুটুল, আব্দুল খালেক, পর্বত, হাফিজুর, নিরঞ্জন, হায়দার, রায়হানসহ অন্তত ১৬ জন প্রতিদিন রান্না থেকে বিক্রি পর্যন্ত সহযোগিতা করে থাকেন। সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ এখান থেকে ইফতার সামগ্রী নিয়ে যায়।
ইকবালের এই এক টাকার ইফতার কিনতে আসা মো. রাকিব হোসেন বলেন, এক টাকায় পণ্য দেওয়াতে গরিব-দুঃখী রোজাদারদের জন্য উপকার হয়েছে। এখানকার ব্যবসায়ীরা ভর্তুকি দিয়ে রোজাদারদের খেদমত করার জন্য এই কাজ করছেন। তাদের দেখাদেখি অন্যরাও এগিয়ে আসবে।
নগরীর মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা মাসুদ আলী মোল্লা বলেন, বর্তমান বাজারের প্রেক্ষাপটে এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। এর জন্য সকল শ্রেণির মানুষ স্বল্পমূল্যে ইফতারি করতে পারবে। সবাই যেন দেশ ও মানুষের সেবায় ভালো উদ্যোগ নেয়। রমজান আত্মশুদ্ধির মাস। আমি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
আপনার মতামত লিখুন :