পুলিশ কর্মকর্তা মামুন খান খুনের মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের ভারতীয় পাসপোর্ট বাতিল করতে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। শিগগিরই যাতে তাঁর পাসপোর্ট বাতিলের প্রক্রিয়া ভারত সরকার শুরু করে, সে চেষ্টা চালাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ জন্য ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনকে চিঠি দেবে মন্ত্রণালয়। এই চিঠির ভাষা ও বিষয়বস্তু এর মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বাংলাদেশের নাগরিক রবিউল পালিয়ে ভারতে গিয়ে নাম পাল্টে সে দেশের পাসপোর্ট কীভাবে পেল, সেটি ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় জানানো হয়েছে।
ভারতকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি দেওয়া না হলেও বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। এই আলোচনায় বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আরাভের পাসপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। একই সঙ্গে তাঁর ভারতীয় পাসপোর্ট বাতিলের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের উচ্চপর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আরাভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তা পর্যালোচনা করছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
এ ছাড়া আরাভ ভারতের যে ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্ট নিয়েছেন এবং যে কার্যালয় থেকে পাসপোর্ট নিয়েছেন, সে বিষয়েও তারা খোঁজখবর নিচ্ছে। আশা করা যায়, শিগগিরই আরাভ খানের ভারতীয় পাসপোর্ট বাতিলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভারতের পাসপোর্টে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক রবিউল ওরফে আরাভকে দেশে ফেরত আনতে কাজ করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর অংশ হিসেবে ডিবি পুলিশ সদর দপ্তরকে একটি চিঠি দিয়েছে। এই চিঠি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাবে। পরে তা ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনে হস্তান্তর করা হবে। মূলত এই চিঠিতে নিজেকে আরাভ পরিচয় দিয়ে রবিউলের ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
দুবাইয়ে আরাভ খান নামে আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী হয়ে ওঠা রবিউল পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি। মামুন খুন হন ২০১৮ সালের ৮ জুলাই। পরদিন গাজীপুরের জঙ্গল থেকে তাঁর আধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বাদী হয়ে ঢাকার বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে পলাতক রবিউল ওরফে আরাভসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলাটি এখন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
আপনার মতামত লিখুন :