লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমানকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে ইউপি চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
ইউএনও রোববার ওই চিঠি দিলেও সোমবার তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পায়। বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান ২০২১ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন।
ইউএনও মো. ইমরান হোসেন ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যরা অনাস্থা দিয়েছেন। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানান জেলা প্রশাসক। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন। তাঁর ওই অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিষদসহ জনস্বার্থ পরিপন্থী হওয়ায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের অতিদরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় ৮২ জন শ্রমিকের জন্য ২৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান প্রকৃত শ্রমিকদের নামে বিকাশ অ্যাকাউন্ট না খুলে নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে সে টাকা আত্মসাৎ করেন। একই অর্থবছরের টিআর, কাবিখা, কাবিটা বরাদ্দের দুই কিস্তির ১০ লাখ টাকা নামমাত্র প্রকল্পে ব্যয় দেখান তিনি। কোনো ধরনের সভা ছাড়াই চেয়ারম্যান অবৈধ সুবিধা নিতে এডিপি খাতের ১০ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রকল্প তালিকা দাখিল করেন। এ ছাড়া হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ আদায়কৃত দুই লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেন।
এসব ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মাইন উদ্দিনের স্বাক্ষরিত একটি অনাস্থাপত্র জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেওয়া হয়। এতে ১২ জন সদস্যের মধ্যে ১০ জন সদস্য চেয়ারম্যানের নামে বিভিন্ন অভিযোগ আনেন।
বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করিনি। ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। স্বতন্ত্র থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই একটি চক্র আমার ক্ষতি করার চেষ্টায় নেমেছে। তারাই মিথ্যা নাটক সাজিয়ে এটি করেছে।’
আপনার মতামত লিখুন :