ব্যাংক ও আর্থিক খাত নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগ।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। গ্রেফতাররা হলেন- মো. সাইদ উল্লাহ, মো. মোশাররফ হোসেন, শহিদুল্লাহ মজুমদার ও ক্যাপ্টেন (অব.) হাবিবুর রহমান।
ডিবি জানায়, গ্রেফতাররা সবাই ব্যাংকার এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে কর্মরত ছিলেন। তারা ব্যাংকটিকে ধ্বংসের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে টালমাটাল করে সরকারকেও বেকায়দায় ফেলে দিতে চান।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে জামায়াত-শিবির। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য ব্যাংক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্যাংকটি অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। সম্প্রতি এই ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা ব্যাংক সম্পর্কে মনগড়া তথ্য প্রদান করে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ান। তারা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে গুজব ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করা।
সম্প্রতি কিছু লোককে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যমতে ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত কিছু ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়। তাছাড়া তাদের দেওয়া তথ্যমতে আরও কিছু কর্মকর্তাকে সন্দেহের মধ্যে রেখে অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে, যোগ করেন হারুন অর রশীদ।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার সঙ্গে কিছু সংখ্যক স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি জড়িত ছিলেন। পরে এ ব্যাংকটি যখন স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের হাত থেকে এস আলম গ্রুপসহ অন্যান্যদের হাতে আসে, তখন থেকে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রটি ব্যাংকটিকে ধ্বংসের পায়তারা শুরু করে। ব্যাংকটি ধ্বংসের পাশাপাশি তারা দেশের অর্থনীতিকে টালমাটাল করে বর্তমান সরকারকেও বেকায়দায় ফেলে দিতে চায়। তারা মূলত স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সহযোগিতায় তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। যা কখনোই কাম্য নয়। এই ঘৃণ্য অভিপ্রায় কখনোই সফল হবে না।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় গত ৮ জানুয়ারি মোহাম্মদ নুর উন নবী, মো. আফসার উদ্দিন রোমান, মো. আবু সাইদ সাজু, মো. স্বাধীন মিয়া ও মো. আব্দুস সালামকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গুলশান থানায় করা মামলায় তাদের আদালতে পাঠানো হয়। গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যমতে এ ঘটনায় জড়িত আরও চারজনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা তাদের অপকর্মের কথা স্বীকার করেছেন জানিয়ে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে।
দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার প্রচারণা একটি গুজব। আতঙ্কিত হয়ে ব্যাংক থেকে আমানত উত্তোলনে বিরত থাকুন।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে উৎসাহ দিতে হবে। এ বিষয়ে গুজব থেকে সচেতন থাকুন। এবং গুজব রটনাকারীদের বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :