পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন ‘সরকার একটি উন্নত, সুন্দর, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে চায়। তিনি জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উনি বলেছেন মিয়ানমারে কিছু সমস্যা আছে। তাদের মধ্যে বেশ অসুবিধা আছে, সেই জন্য দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তবে তিনিও আশাবাদী।’
‘আমরা বলেছি, জিনিসটা যদি তাড়াতাড়ি সমাধান না হয় তাহলে তারা উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকতে পারে। তারা রাষ্ট্রহীন মানুষ, তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। সে জন্য তারা উগ্রপন্থা ও সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে যেতে পারে। তাতে এই পুরো অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নিত হবে। সে জন্য আপনারা বিশেষ উদ্যোগ নেন। যাতে এই সমস্যাটার তাড়াতাড়ি সমাধান হয়। অন্ততপক্ষে প্রক্রিয়া শুরু হয়। তিনি তাতে হ্যাঁ বলেছেন,’ জানান মোমেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশটা গণতান্ত্রিক দেশ আর আপনারা দেখেছেন, গত ১৪ বছরে কত হাজার নির্বাচন হয়েছে এবং সুষ্ঠু হয়েছে। এই সেদিন একটি নির্বাচন হয়েছে এবং সুষ্ঠু হয়েছে। হ্যাঁ, অন্যরা আমাদের পরামর্শ দিতে পারে। এখন একটু দুঃখজনক নির্বাচনের সময় কেউ মারা যায়। আল্লাহর রহমত এবার কেউ মারা যায়নি। এগুলো আমাদের দূর করতে হবে, এটা কেউ সুপারিশ করে দূর করতে পারবে না। এটা আমাদেরই করতে হবে। দেশের জনগণ, সব দল; সরকারপক্ষ-বিরোধীপক্ষ আমরাই এই পরিবেশ উন্নত করতে পারি। অন্য কেউ হয়তো জিনিসটি ধরিয়ে দিতে পারে কিন্তু কাজটি আমাদেরই করতে হবে।’
‘সরকার একটি উন্নত, সুন্দর, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে চায়। কারণ শেখ হাসিনা গত ১৪ বছরে যে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন, সে জন্য আমাদের বিশ্বাস জনগণ আমাদের আবারও নির্বাচিত করবে তাদের নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য।
উল্টো দলের সময় মারামারি-কাটাকাটি, বাংলা ভাই, যাকে তাকে ধর্ষণ…তাদের তো ইতিহাসই এটা। জনগণ তো বোকা না! আমরা জনগণকে বিশ্বাস করি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবে। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল, আমরা কখনো পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসিনি,’ বলেন মোমেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাংয়ে সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে। সুখের বিষয় যে, চীন আমাদের উন্নয়নের মহাসড়কে সম্পৃক্ত থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’
সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের বাংলাদেশ ভ্রমণ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছি। তার মানে এখানে অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে; ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ-সুবিধা আছে। কেউ এগুলো হাতছাড়া করতে চায় না।’
চীনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়ে আমরা অবগত। একইসঙ্গে এই ২ রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন—গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। তাদের সমস্যা থাকতে পারে সেটা তাদের ব্যাপার। আমরা তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবো। কী কারণে তাদের সমস্যা সেটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়; আমরা এই নীতিতে বিশ্বাস করি।’
আপনার মতামত লিখুন :